শুক্রবার, ০৯ জুন ২০২৩, ০৮:৩৪ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
কলারোয়ায় কিশোর গ্যংয়ের হামলায় তরুণ নিহত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় প্রথম ঝিনাইদহের আশিকুজ্জামান প্রান্ত সরকারি চাকুরিজীবী সকলকে সরকারের নির্দেশিত ডকুমেন্টস অনুযায়ী কাজ করতে হবে- পার্বত্য সচিব মো. মশিউর রহমান শৈলকুপার সোহরাব আলী ৬১ বছর পর স্কুলের বেতন পরিশোধ করলেন! ঋষি ফাউন্ডেশন’র ১১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন বাগআঁচড়ায় এমপি আফিল উদ্দিনের আগমন উপলক্ষে সামটায় নিবার্চন প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত শার্শায় বর্ণাঢ্য আয়োজনে যায়যায়দিনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হৃদয়ের বন্ধন ব্লাড ব্যাংকের তৃতীয় বর্ষে পদার্পনে মিলনমেলা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত শার্শায় জামগাছ থেকে পড়ে স্কুল ছাত্রের অকাল মৃত্যু ভালো দাম পেলে বিক্রি হবে আসমা ভাবির লালু পালোয়ান।

কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে নীলফামারীর নীলকুঠি

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ১৪৪ Time View

নীলফামারী প্রতিনিধি ::
নীলফামারী সদরের পলাশবাড়ীতে ব্রিটিশদের নির্মিত দাড়িয়ে থাকা ভবনটির দিকে চোখ পড়লেই হৃদয়পটে নাড়া দেয় এক সময়ে হতদরিদ্র কৃষকের ওপর অত্যাচারী নীলকরদের নির্যাতনের বীভৎস দৃশ্য। আর এই নীলকুঠি উত্তরের সমৃদ্ধ জেলা নীলফামারীর এখন অতীত ঐতিহ্য। ব্রিটিশ আমলে এ জেলায় প্রচুর পরিমানে নীল চাষ হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে নির্মিত হয়েছে নীলকুঠি। আর নীলকুঠি ছিলো তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের নীলকুঠিয়ালাদের নীল চাষের কেন্দ্রস্থল।

বর্তমান নীলফামারী শহরের তিন কিলোমিটার উত্তরে ‘লটখানা’ নামে নীল খামার অবস্থিত। কালের পরিবর্তনে শব্দটি উচ্চারিত হতে থাকে “নটখানা” নামে। আর নটখানা থেকেই “নীলফামারী” শব্দটির প্রচলন। এক সময়ে এই নীল খামারে অবাধ্য চাষীদের এনে লটকিয়ে শাস্তি দিতো ব্রিটিশ নীল কুঠিয়ানরা।

ধারণা করা হয়- স্থানীয়দের বাচনভঙ্গির কারণে ‘নীল খামার’ রূপান্তর হয় ‘নীল খামারী’ এবং পরবর্তীতে নীলখামারী অপভ্রংশ হয়ে নীলফামারী’র উদ্ভব হয়েছে। আরেক মত- নীল ফার্মার পরিবর্তিত হয়েও নীলফামারী হতে পারে। তবে নামকরণ নিয়ে যে বিতর্কই থাকুক না কেন নীল চাষকে কেন্দ্র করেই ‘নীলফামারী’ শব্দের উৎপত্তি তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

নীলফামারী ডিসি গার্ডেনের সামনের এই কুঠিটি ১৯৯৯সাল থেকে নীলফামারী অফিসার্স ক্লাব হিসাবে ব্যবহার হয়ে আসছে। ঔপনিবেশিক স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত ৬৩ফুট চওড়া ৫১ফুট প্রস্তের এ টিনশেড ভবনে রয়েছে ২টি ফায়ার প্লেস, ২টি বেড রুম, ১টি ড্রয়িংরুম, ২টি বাথরুম ও পিছনের দিকে একটি বারান্দা।
অষ্টাদশ শতাব্দীতে ইংল্যান্ডে কলে তৈরি কাপড়ের শিল্পবিপ্লব ঘটলে রঙের জন্য নীলের প্রয়োজন পড়ে। সে সময়ে ব্রিটিশ সরকার ভারত উপমহাদেশকে শাসন করছিল। তখন সেই সূত্র ধরে পূর্ব বাংলার কৃষককে তারা জোর করে নীল চাষ করতে বাধ্য করেছে। জমি বর্গা নিয়ে কৃষকদের চাষ করতে হতো নীল। কিন্তু নীলকর, জমির মালিকের পাওনা, চাষ খরচ সবকিছুই বাদ দিয়ে কৃষকের ভাগ্যে জুটতো শূন্যের অঙ্ক। ফলে কৃষক নীল চাষে অস্বীকৃতি জানায়। এ কারণে তাদের ওপর নেমে এসেছিলো অপমান আর নানান ধরনের নির্যাতন। তাদের স্ত্রী-সন্তানদের উপরেও চালানো হতো অত্যাচার। এরকম অপ্রিয় ঐতিহাসিক সত্য কথাগুলোকে নতুনভাবে মনে করিয়ে দেয় এ ভবনটি।

কালের বিবর্তনে ইতিহাস বদলে এখন অনেক সময় পার হয়ে গেছে। যুগের সাথে বদলে গেছে নীল কুঠির বাসিন্দারাও। ১৮৮২সাল থেকে এটি মহাকুমা প্রশাসকের বাসভবন, ১৯৮৪সাল থেকে ১৯৮৮সাল পর্যন্ত এটি ছিল জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এর বাসভবন। বর্তমানে এটি নীলফামারী অফিসার্স ক্লাব হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে মজার ব্যপার হচ্ছে প্রায় ১৫০বছর পুরোনো এ ভবনটি কোনো ধরনের পরিবর্তন ছাড়াই আজও অটুট আছে।

জনমনে আজ ফুটে উঠেছে ইতিহাসের তাগিদে ভাবনটি সরকারিভাবে সংরক্ষণের প্রয়োজন। আর এই অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ইতিহাসের কথা শুধু নীলফামারীবাসী নয়, পুরো বাংলাদেশের আগামী প্রজন্ম যেন জানতে পারে। তাই স্থানীয় জনগণের ইচ্ছা, স্মৃতিময় এ ভবনটি সংরক্ষণ করে জাদুঘরে পরিণত করা হোক।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 SN BanglaNews
কারিগরি সহযোগিতায়: