করোনার ‘লাল’ তালিকা ভুক্ত যশোরে স্বাস্থ্যবিধি পালনের নিষেধাজ্ঞার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ‘ধারণক্ষমতার বেশি’ যাত্রী নিয়ে বেনাপোল-যশোর ও সাতক্ষীরার রুটে আন্তঃজেলার মধ্যে যানবাহন চলাচল করছে।
যশোর-বেনাপোল ও যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কে আন্তঃজেলার মধ্যে চলাচলকারি বাস ও তিনচাকাগুলোতে ধারণক্ষমতার বেশি যাত্রী বহন করা হচ্ছে। এইসব বাসের চালক, সুপারভাইজার ও সহকারিদের কারও মুখে মাস্ক নেই।এসব যানবাহনে হ্যান্ড সেনিটাইজার কিম্বা জীবানুনাশক স্প্রে করার কোন ব্যবস্থা না রেখেই গতানুগতিক ভাবে যাত্রী বহন করা হচ্ছে।
সরেজমিন বেনাপোল ও বাগআচড়া বাসস্ট্যান্ডে দেখা গেছে এসব চিত্র।বেনাপোল থেকে আন্তঃজেলার মধ্যে চলাচল করা বাস ছাড়াও দেশের অভ্যন্তরে অন্তত ১৪টি রুটে পরিবহন যাতায়াত করে।আর বাগআচড়া থেকে যশোরমুখি বাসগুলো চলাচল করে।মহামারীর বিস্তার ঠেকানোর লক্ষ্যে বাসে ও তিনচাকায় অর্ধেক যাত্রী নেওয়ার কথা থাকলেও চালকরা আগের মতোই যাত্রী বহন করছেন। চালক ও যাত্রীরা শারীরিক দূরত্বের বিষয়টি মোটেও তোয়াক্কা করছেন না।এমন কি মাস্কের ব্যবহারও উঠে গেছে।
চালকের সহকারি কে মাস্ক ব্যবহার না করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাত্রই তো বিধিনিষেধ শুরু হলো,আরেকটু বাড়ুক তখন আবার নিয়মিত মাস্ক পরবো। মাস্ক পরে কথা বলা যায় না!
বাসে এত যাত্রী তোলার কারণ জানতে চাইলে সুপারভাইজার (কন্ডাকটর) লুৎফর রহমান বলেন, আমরা তো প্রতিদিনই এমন যাত্রী বহন করি।তাছাড়া শনিবার থেকে নাকি বিধিনিষেধ দিয়েছে।অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলতে হবে,তারপরও তো এভাবে চলছি।কেউ তো কিছু কচ্ছে না।এই ক’দিন একটু যাত্রী বেশি হচ্ছে।
মাস্ক ব্যবহার না করার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে যাত্রীদের কেউ বলেন, মুখ থেকে পড়ে গেছে।কেউ বলেন,আনতে ভুলে গেছেন। আবার কেউ বলেন,খুলে পকেটে রেখেছি।
বাস যাত্রী বাগআচড়ার খোরশেদ আলম বলেন,”সবাই কচ্ছে তবে কেউ তো মাস্ক পরছে না। নাকের মদ্দি শিরশির করে তাই মাস্ক পরতি পারিনে।”
এমনই চিত্র দেখা গেছে বাসের অধিকাংশ যাত্রীর ক্ষেত্রে।সবারই বিধিনিষেধ মানায় অনীহা। অথচ প্রতিদিনই যশোরাঞ্চলে বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ।
সিভিল সার্জন ডাঃ বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস জানান,যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মঙ্গলবার ১৩১টি নমুনা পরীক্ষা করে ১০৯ এবং যশোর সদর হাসপাতালে ১৩৪ টি নমুনা পরীক্ষা করে ৮৭ জন করোনায় আক্রান্ত হন।এ দিন শনাক্তের হার প্রায় ৪৩.৩৫ শতাংশ। সোমবার ৩৭৯টি নমুনা পরীক্ষায় ১৯৫ জন করোনায় আক্রান্ত হন। এ দিন আক্রান্তের হার প্রায় ৫১ শতাংশ।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আলিফ রেজা বলেন,আমরা অনেক চেষ্টা করছি, মাইকিং করেছি,নিজে সরেজমিনে বুঝিয়েছি,জরিমানা করেছি কিন্তু মানুষ তো অসচেতন,কিছুই মানতে চাচ্ছেনা। ধর্মের দোহাই দিচ্ছে,আরও কতো কি ব্যাখ্যা।আমাদের নিজ থেকে সচেতন না হলে আসলেই তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।
মিলন কবির/এসএনবিএন