যশোর প্রতিনিধি: উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার স্বাক্ষর জালিয়াতি,স্কুলের অর্থ আত্মসাৎ, ছাত্রীদের কুপ্রস্তাব,বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীদের সাথে অশোভন আচরণ, এমনকি স্কুলের ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করার মতো বেশ কয়েকটি কুকর্মের জনক কলারোয়ার চন্দনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনছার আলীর বিরুদ্ধে সংবাদ সন্মেলন করেছেন ওই প্রতিষ্ঠানের সহকারি প্রধান শিক্ষিকা। সোমবার দুপুরে শার্শা উপজেলার নাভারণ বাজারে উপজেলার কর্মরত সাংবাদিকদের উপস্থিতে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ওই বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষিকা সাহানিমা আক্তার লতার স্বামী যশোরের শার্শা উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নানের ছেলে আবু নঈম মো: নুরুজ্জামান লাল্টু। চন্দনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বহুদিনের ঐতিহ্য এই প্রধান শিক্ষকের জন্য দিনে দিনে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি। কলারোয়া উপজেলার চন্দনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাত,ছাত্রী কেলেঙ্কারি এবং সহকারী প্রধান শিক্ষিকাসহ অন্য শিক্ষকদের সহিত অনৈতিক কথাবার্তা বলা সহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এক শিক্ষক দম্পতি। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, চন্দনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আনছার আলী একজন জামায়াতে ইসলামের সক্রিয় কর্মী।
তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎ ও ছাত্রী কেলেঙ্কারির সাথে জড়িত। বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষিকাদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে তিনি অনৈতিক কথাবার্তা বলেন। তারই ফলশ্রুতিতে গত ২৫ অগাস্ট সহকারী প্রধান শিক্ষিকা মোছা: সাহানিমা আক্তার লতার সহিত বিভিন্ন প্রকার অনৈতিক কথাবার্তা বললে প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা কাটাকাটির সৃষ্টি হয়। এসময় ওই শিক্ষিকার স্বামী খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে শিক্ষিকার স্বামীকেও লাঞ্ছিত করেন এবং বিদ্যালয় থেকে বের করে দেন। খবর পেয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি ডালিম হোসেন মিমাংসা করে বিষয়টির সমাধান করার জন্য উভয় পক্ষকে আশ্বাস দেন। এসময় প্রধান শিক্ষক না বসাবসি করে গত ৩০ অগাস্ট কলারোয়া থানায় উপস্থিত হয়ে একটি মিথ্যা মামলা করেন। যার নং-৩৬৩/২২। এ ছাড়া গত ০৪সেপ্টেম্বর কলারোয়ার একটি অনলাইন মিডিয়ায় মিথ্যা বানোয়াট কথা বলেন এবং সন্ত্রাসী আখ্যায়িত করে সম্মানহানি করার পাশাপাশি শিক্ষক দম্পত্তির সকল সদস্যকে অপহরন করার হুমকি দেন।
এমতাবস্থায় ওই শিক্ষক দম্পতি পরিবার পরিজন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগ করেন। অভিযোগে তিনি আরো বলেন, প্রধান শিক্ষক এর আগে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো: আব্দুল হামিদ সাহেবের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে হাতেনাতে ধরা পড়েন। স্বাক্ষর জালিয়াতি করে তিনি আমার স্ত্রীর চাকুরিও সমস্যা করতে পারেন। শুধু এতগুলো অভিযোগই শেষ নয়। প্রধান শিক্ষক মো: আনছার আলী বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ফুসলিয়ে স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে ভূয়া কাবিন করে বিয়ে করার অভিযোগও রয়েছে।এ ঘটনায় ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যশোর আমলী আদালতে মামলা হয়। যার নং-৬৩/২১। সে ঘটনার তদন্ত করেন যশোর পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেষ্টগেশনের তদন্ত টিম।
সে ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যায়। উক্ত মামলাটি এখনো বিচারাধীন রয়েছে। এমতাবস্থায় একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান সহ পুত্রবধু বিদ্যালয়ে সুন্দর ও সুষ্ঠু পরিবেশে শিক্ষকতা করতে পারেন এবং আশু সুবিচার পাইতে পারেন তার জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী মহোদয় ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলন শেষে অসহায় পরিবারটি বলেন, প্রধান শিক্ষক জামায়াতে ইসলামীর একজন সক্রীয় কর্মী হয়ে শুধুমাত্র অবৈধ অর্থের জোরে এতো অভিযোগের পরও বহাল তবিয়তে টিকে থাকতে পারে তার খুঁটির জোর কোথায়? একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে সমাজে হেয়প্রতিপন্ন করে যেভাবে লাঞ্ছিত করেছে স্থানীয় প্রশাসনের কাছেও বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।