বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:২৬ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
কালীগঞ্জে ভরসার নতুন জানালা উদ্যোক্তাদের বিশেষ প্রশিক্ষণ ঝিনাইদহে বসেছে দেশে প্রথম ড্রাগন ফলের বাজার, দুশ্চিন্তা কেটেছে কৃষকদের বিকাশ রকেট নগদ ও উপায় এর হ্যাকার চক্রের দুই সদস্য আটক শার্শায় ৪টি ক্লিনিককে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে জরিমানা কালো ও বেগুনী জাতের ধান চাষ করে অবাক করেছেন শার্শার কৃষক জিয়া। শার্শায় অস্ত্র ও গুলিসহ গোল্ড নাসিরকে আটক করেছে র‌্যাব মহেশপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় এক শিক্ষার্থী নিহত ডিএমপি কমিশনার হলেন হাবিবুর রহমান মহেশপুরের দত্তনগর কৃষি খামারের বিএডিসির ৮ কর্মকর্তা কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুদকে মামলা যশোর-বেনাপোল সড়কের শতবর্ষী গাছ গুলো এখন মরণ ফাঁদ।

শৈলকুপার সোহরাব আলী ৬১ বছর পর স্কুলের বেতন পরিশোধ করলেন!

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৮ জুন, ২০২৩
  • ৬০ Time View
শৈলকুপার সোহরাব আলী ৬১ বছর পর স্কুলের বেতন পরিশোধ করলেন!
শৈলকুপার সোহরাব আলী ৬১ বছর পর স্কুলের বেতন পরিশোধ করলেন!

বসির আহাম্মেদ,ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মহম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা নাম তার সোহরাব আলী। তিনি ৬১ বছর পর স্কুলের বেতন পরিশোধ করলেন । বর্তমানে তার বয়স ৭৫ বছর। হঠাৎ মনে হলো বিদ্যালয়ে তার বেতন বাকি আছে। ঋণি থাকতে চাননা তিনি। তাই নিজ উদ্যোগে বিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে স্কুলের বেতন পরিশোধ করেছেন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার বেতন পরিশোধের রশিদও দিয়েছেন, যা তিনি যতœ করে রেখে দিয়েছেন।

সোহরাব আলী জানান,আমার বাবা দরিদ্র ছিলেন। অন্যের জমিতে কৃষি কাজ করে তাদের সংসার চলতো। আমি শিশু অবস্থায় পাশের গ্রাম বড়দা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করি। ওই স্কুল থেকে পঞ্চম শ্রেণী পাশ করে ১৯৬২ সালে বাড়ি থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে ফুলহরি বাজারে অবস্থিত ফুলহরি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। ভর্তির পর ক্লাস করি মাত্র ৬ মাস।
সোহরাব আলী ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মহম্মদপুর গ্রামের মৃত আব্দুল করিম বিশ্বাস এর ছেলে। স্ত্রী, দুই মেয়ে আর এক ছেলে রয়েছে তার।

গত মঙ্গলবার ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে বেতন পরিশোধ করেন তিনি। বর্তমান বাজারমুল্য বেশি থাকায় এক সঙ্গে ৩ শত টাকা জমা দিয়েছেন।
সোহরাব জানান, বাবা দরিদ্র হওয়ার ফলে ঠিকমতো পড়ার খরচ দিতে পারতাম না। বিদ্যালয়ে সেই সময়ে মাসিক বেতন দিতে হতো ৪ টাকা । সেসময় চার মাস বেতন বাকি পড়ে যায়। এই অবস্থায় আমি লজ্জায় পড়ে যায়। তখন পড়ালেখা ছেড়ে দিয়ে বাবার সাথে কৃষি কাজে নেমে পড়ি। প্রথম বাবার সঙ্গে মাঠে কৃষি কাজ করেছি।কাজ করতে করতে বাংলাদেশ পুলিশের চাকুরীতে যোগদান করি। পুলিশের টেনিং শেষে বাড়ি এসে হাটে হাটে খোলা জায়গায় তেল-মসলার দোকান বসিয়ে ব্যবসা করে জীবন কাটিয়েছি ।

তিনি আরো জানান, ব্যবসা করা অবস্থায় ১৯৭১ সালে দেশে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে চলে যায় ভারতে । প্রথম দফায় রানাঘাট যায়, তারপর করিমপুর। সর্বশেষ বেতাই ক্যাম্পে প্রশিক্ষন নিয়।বেশ কিছুদিন প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেই প্রশিক্ষক হয়ে যায়।
সোহরাব আলী জানান, দেশ স্বাধীন হলে কিছুদিন পর বাড়ি ফিরে এসে আবারো  নিজের ব্যবসা শুরু করি। এভাবে ব্যবসা করে জীবন কাটিয়েছেন।

আর তার তদারকির অভাবে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় আজও তার নামটি আসেনি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সোহরাব আলী।
ফুলহরি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লক্ষণ প্রসাদ সাহা জানান, তাদের এই বিদ্যালয় ১৯২৯ সালে প্রতিষ্ঠিত। সোহরাব আলী ভর্তি হন ১৯৬২ সালে বলে জেনেছেন। যখন সোহরাব আলী বেতন দিতে আসেন তখন অফিসের কাজে তিনি বাইরে ছিলেন। তবে অন্য শিক্ষকরা তার এই ৬১ বছর পর বেতন পরিশোধ করতে আসায় খুব খুশি হয়েছেন। জমা রশিদ দিয়ে তার টাকাটা গ্রহন করা হয়েছে। তার এই সততায় বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-কর্মচারীরা মুগ্ধ হয়েছেন। বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী ছাদিকুর রহমান জানান, তিনি নিজ হাতে তার বকেয়া বেতনের টাকাটা গ্রহন করেছেন।এবং তার বেতন পরিশোধের রশিদও দিয়েছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 SN BanglaNews
কারিগরি সহযোগিতায়: