বাবা মারা গেছেন সকালে।চলছিলো লাশ দাফনের প্রস্তুতি।এরই মধ্যে লাশ রেখে ৭ভাই ও তিন বোনের সম্পদ ভাগাভাগি নিয়ে ঝগড়া লাগে। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে সুষ্ঠ বন্টনের আশ্বাসে শেষ পর্যন্ত রাতে দাফন হয়েছে বাবার লাশ।
ঘটনাটি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামে ঘটে।
জানা যায়, বিষ্ণুপুর গ্রামের আব্দুল মজিদ স্ত্রী, ৭ পুত্র ও ৩ কন্যা এবং ৪৫ বিঘা জমি রেখে শুক্রবার সকাল ১১ টার দিকে ইন্তেকাল করেন। তাকে দাফন করার জন্য যখন সবাই ব্যস্ত হতে থাকে তখন তার চার সন্তান আব্দুল মান্নান, আব্দুল হাকিম, আব্দুস সালাম ও আব্দুল আহাদ অভিযোগ করেন তার তিন ভাই আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুস সামাদ ও আসাদুজ্জামান তাদের বাবা আব্দুল মজিদকে ফুসলিয়ে ৫বিঘা জমি লিখে নিয়েছে এবং পিতার জমি বিক্রয় করে ১৬ লক্ষ টাকা নিয়েছে। জমি এবং টাকার সঠিক হিসাব না হওয়া পর্যন্ত পিতার লাশ দাফন হবে না বলে চার ভাই জানায়।
আব্দুল আহাদ জানায়, তার বাবা স্ট্রোকজনিত রোগে অসুস্থ ছিল। এই সুযোগে তার তিন ভাই আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুস সামাদ ও আসাদুজ্জামান বাবার নিকট থেকে একবিঘা করে জমি রেজিস্ট্রি করে নিয়েছে। আমরা যখন জানতে পারি, তখন থেকে তাদের জমি ফেরত দেয়ার কথা বলি কিন্তু অনেক দিন ধরে তারা জমি ফেরত দিতে চেয়েও দেয়না। সেজন্য এই বিষয়টি আজকেই সমাধান হতে হবে। তা না হলে ওরা এই জমি আর কোনদিন ফেরত দেবে না। বাবার সম্পতি সবাই সমান ভাগিদার। তারা কেন বেশী নেবে। বিষয়টি নিয়ে বিকালে মরহুমের বাড়িতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে এক শালিশী বৈঠক বসে। শালিশী বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ আব্দুর রাজ্জাক, প্রকৌশলী আব্দুস ছাত্তার খা, আলহাজ¦ মিজানুর রহমান, সোহরাব হোসেন, ইউপি সদস্য রেজাউল ইসলাম, ইউপি সদস্য গোলাম রসুল, ইউপি সদস্য এরশাদ আলী, মহিলা ইউপি সদস্য রেহেনা খাতুন, সাবেক ইউপি সদস্য আবু সামা, সাবেক ইউপি সদস্য আতিয়ার রহমান, জাকির হোসেন, হুমায়ুন কবীর প্রমূখ।
বৈঠকে ৭ ভাই ও তিন বোনকে ডেকে সিদ্ধান্ত করা হয় বাবার সম্পদ সমান বন্টন হবে। কেউ বেশি নিতে পারবে না। সকলে এ সিদ্ধান্তে সম্মতি প্রকাশ করলে সবাইকে স্টাম্পে স্বাক্ষর করে নেয়া হয় এবং ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির সদস্যরা খুব দ্রত তাদের ভাই বোনদের নিয়ে বসে সঠিক বন্টন করবেন এবং যাদের নামে বেশি জমি রেজিস্ট্রি হয়েছে। তারা অন্য ভাইদের জমি ফেরত দেবে।
ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ আব্দুর রাজ্জাক জানান, সব ভাইবোনের সাথে কথা বলে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করি খুব দ্রত আমরা তাদের সমস্যার সমাধান করতে পারবো। তবে বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমরা চায়না এমন ঘটনা কোন পরিবারে ঘটুক।